পুলিশকে যেসব নির্দেশনা দিলেন আইজিপি

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মুভমেন্ট পাস ছাড়া অযথা চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মনিটরিং, মসজিদে জমায়েত ও ইফতার মাহফিল নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। লকডাউন শুরুর আগেই তিনি কর্মকর্তাদের নিয়ে এক বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন।

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আজ ১৪ এপ্রিল থেকে আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধ এবং পবিত্র রমজান উপলক্ষে সব পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপার ও থানার অফিসার ইনচার্জদের নিয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সের অংশ নেন আইজিপি। এ সময় তিনি সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার এ নির্দেশনা দেন। বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে এআই‌জি (মি‌ডিয়া অ্যান্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স) সোহেল রানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোভিড-১৯ সংক্রমণ, লকডাউন, রমজান উপলক্ষে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা ছবি আপলোড করে কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেন সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট না করতে পারে তা নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন আইজিপি।

তিনি বলেন, পবিত্র রমজান মাসে জুমা ও ওয়াক্তের নামাজের সময় মসজিদের ভেতরে বা বাইরে কোনও জমায়েত এবং ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। রমজান উপলক্ষে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনসমূহের ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীর পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম প্রতিহত করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। রমজান উপলক্ষে জাকাত, ফিতরা, খাদ্য সামগ্রী ইত্যাদি বিতরণের ক্ষেত্রে জনসমাগম পরিহার নিশ্চিত করতে হবে।

আইজিপি বলেন, ধৈর্য ধরে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সরকারি বিধি-নিষেধ প্রতিপালনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন আইজিপি। তিনি বলেন, খাদ্যপণ্য, ওষুধ, উৎপাদন সামগ্রী ও অন্যান্য জরুরি সেবার যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হবে।

বোরো ধান কাটার জরুরি প্রয়োজনে কৃষিশ্রমিক পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকরা এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করতে পারবেন বলে সভায় জানান আইজিপি।

তিনি বলেন, রমজানে মহাসড়কে কোনও ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না।আইজিপি বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অনেক মানুষ ঢাকা ও অন্যান্য শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যেতে পা‌রেন, সেসময় তাদের বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এসময় রেল স্টেশন, লঞ্চ ও বাস টার্মিনালে ঘরমুখী মানুষের ভিড় বাড়তে পারে। জনশৃঙ্খলা রক্ষায় এসব স্থানে পুলিশি টহল বাড়াতে হবে।

রমজানে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন আইজিপি।রমজানে রাতের বেলায় উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো এবং দ্রুতগতিতে চলাচলকারী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন আইজিপি।আইজিপি বলেন, দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ইউনিট প্রধানদের নির্দেশ দেন।